নিজস্ব প্রতিবেদন:বর্শি নদীতে ফেলার পর আপনার লাইন ভালোভাবে টান টান করে বাশের কাটি (ফতনা) র উপরে রাখুন, দেখবেন ছোটমাছ ঠুকরাচ্ছে, ছোটমাছ কে খেতে দিন, যখন বোয়াল সামনে আসবে (যদি আপনার বর্শিতে টোপ থাকে) ছোটমাছ জালাতন বন্ধ করে দিবে, সাবধান হউন, হিট করার সময় চলে আসলো বলে, যখন দেখবেন বাশের কাটি নিছের দিকে ধাবিত ।এই প্রজাতির মাছের দেহ লম্বা ও পাশে চ্যাপ্টা। দেহ অাঁশহীন।
মাথা চ্যাপ্টা এবং দুটি লম্বা ও দুটি খাটো স্পর্শী আছে। এদের দৈর্ঘ্য ২০০ সেন্টিমিটার এবং ওজন ৪৫ কেজিরও বেশি হতে পারে।নদীর ক্ষেত্রে বোয়াল ধরার সময় বাংলায় আশ্বিন মাস থেকে শুরু হয়ে আবার যতদিন নদীতে পানি না আসে আমাদের বোয়াল শিকার চলতে থাকে, আপনারা যারা নদীতে নতুন ভাবে বোয়াল শিকারে যাইতে চাইতেছেন তাদের সহজ উপায়ে বুঝার জন্য তিনটি খন্ডে ভাগ করে দিলাম।
সিজনের শুরুতে নদীর পানি বেশি থাকার কারনে গভীর স্থানে ছোটমাছ কম থাকে বিধায় কম গভীরতায় বসা ভালো,তাই বলে একেবারে চরে না বসা কমপক্ষে ৮/১০ হাত পানির গভীরতা থাকা বাঞ্ছনীয়, যাকে আঞ্চলিক ভাষায় বলে চরে/ডহরে, আর সিজনের শেষদিকে মুল ডহরে বসাই উত্তম।টোপ ফেলে প্রথমে দেখতে হবে ছোটমাছ খাচ্ছে কি না যদি ছোটমাছ একেবারে না খায় তাহলে আপনাকে স্পট বদলাতে হবে, কারন ছোটমাছ যখন আপনার টোপ খায় বোয়াল তখন দুর থেকে ছোটমাছ দেখে খাওয়ার উদ্দেশ্যে আসলে ছোটমাছ পালিয়ে গেলে আপনার টোপ গিলে, আর তাই নদীতে বোয়ালমাছের চারের প্রয়োজন হয়না।
পানির নিচে বেশি মাত্রায় পলি জমা থাকলে আপনার টোপ কালো এবং পলির নিচে লুকিয়ে থাকার সম্ভাবনা থাকে।যে দিকটায় স্রোত একটু কম সে দিকটায় বসা ভালো, কারন স্রোত আপনার টোপ একজায়গায় রাখবেনা, আপনাকে বোয়াল ধরার ক্ষেত্রে ছোট শিষা(স্নিকার, ওয়েট) ব্যবহার করতে হবে।৩য় খন্ড: টোপ ও মাছের আধার পদ্ধতিনদীতে বোয়াল ধরতে গেলে টোপ হিসেবে সর্বপ্রথম পুটি মাছ ই বেশি প্রাধান্য পায়, আজ থেকে ১০/১২ বছর আগে ও আমি বা আমরা পুটিমাছ দিয়েই টোপ দিতাম,-
কিন্তু এখন বড় সাইজের পুটি বাজারে সচরাচর না পাওয়ায় বিকল্প হিসেবে ম্রিগেল মাছ শিকারীদের কাছে খুবই জনপ্রিয়, এর আরো একটি কারণ যে নদীতে ছোটমাছ খুব বেশি সেখানে আপনাকে ম্রিগেল ব্যবহার করতে হবে, ম্রিগেলের চামড়া পুটি মাছের চামড়া থেকে একটু বেশি শক্ত হওয়ায় ছোটমাছ টোপ শেষ করতে সময় বেশি লাগার দরুন এর ফাকে হিট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ৬/৭” সাইজের ম্রিগেলের আইশ ছাড়িয়ে ২৪ ঘন্টা একটি জারে ঢুকিয়ে, চটের বস্তা দিয়ে জারটাকে পেচিয়ে ঠান্ডা ও অন্ধকার জায়গায় রেখেদিন,-
নদীর পারে যাওয়ার পর প্রথমে ম্রিগেলের মাথা ও লেজ কাটুন, পেটের দিক থেকে লম্বালম্বি ভাবে কেটে মধ্যখানের কাটায় হাত দিয়ে ধরে টান দিলেই বড়কাটা বের হয়ে আসবে,এবার লম্বালম্বি ভাবে কেটে দুই পিছ করলেই হয়ে গেলো আপনার বোয়াল মাছের টোপ, একটি ম্রিগেল মাছ দিয়ে দুইটি টোপ করা যায়, এবার একপিছ ম্রিগেলের টুকরো বাম হাতে নিয়ে ডান হাত দিয়ে বর্শি ধরে চামড়ার সাইট থেকে পেচিয়ে পেচিয়ে গাথুন, মনে রাখবেন টোপ যেনো বেশি টাইট না হয়, তাহলে হিট মিছ হওয়ার সম্ভবনা থেকে যায়।
বোয়াল মাছের আধার পদ্ধতি : বর্শি নদীতে ফেলার পর আপনার লাইন ভালোভাবে টান টান করে বাশের কাটি (ফতনা) র উপরে রাখুন, দেখবেন ছোটমাছ ঠুকরাচ্ছে, ছোটমাছ কে খেতে দিন, যখন বোয়াল সামনে আসবে (যদি আপনার বর্শিতে টোপ থাকে) ছোটমাছ জালাতন বন্ধ করে দিবে, সাবধান হউন, হিট করার সময় চলে আসলো বলে, যখন দেখবেন বাশের কাটি নিছের দিকে ধাবিত হচ্ছে ( ভালোভাবে খেয়াল রাখতে হবে, আপনার বাশের কাটি শক্ত হলে বোয়াল ছেড়ে দিতে পারে) কাটি টিকে কমপক্ষে অর্ধেক নোয়াতে দিন, তারপর হাত দিয়ে লাইনে ধরে সজোরে হিট করুন, ইনশাআল্লাহ সফল হবেন।