Breaking News

ঘুমানোর আগে লবঙ্গ চিবিয়ে খেলেই ম্যাজিকের মতো কাজ করে……।

যুগ যুগ ধরে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় লবঙ্গ ব্যবহৃত হয়ে আসছে। দৈনন্দিন জীবনে লবঙ্গের অনেক ব্যবহার রয়েছে। লবঙ্গকে বলা যেতে পারে রান্নার প্রাণ। লবঙ্গ রান্নায় স্বাদ এবং গন্ধ যোগ করে।

জনপ্রিয় মশলা লবঙ্গ হল লবঙ্গ গাছের শুকনো ফুল। লবঙ্গ গাছের বিভিন্ন অংশ যেমন শুকনো ফুল, ডাল এবং পাতা আয়ুর্বেদিক ওষুধে ব্যবহার করা হয়েছে। রান্নায় স্বাদ বাড়াতে লবঙ্গ ব্যবহার করা হয়। তরকারি হোক বা স্যুপ, বেকারির আইটেম হোক বা পাই, মাছ বা মাংস—মশলার প্রয়োগ যে কোনও খাবারকে স্বর্গীয় করে তোলে।

চিরসবুজ লবঙ্গ উদ্ভিদের ইংরেজি নাম লবঙ্গ এবং বৈজ্ঞানিক নাম সিজিজিওমোরোমাটাম। লবঙ্গ গাছের ফুল শুকিয়ে লবঙ্গ তৈরি করা হয়। লবঙ্গকে লবঙ্গও বলা হয়। লবঙ্গ গাছ 15 থেকে 20 ফুট লম্বা হয়। ফুলের সাথে ফুলের কুঁড়ি শুকিয়ে গেলে লবঙ্গ হয়ে যায়। ফল 1 ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা, মাংসল, পাকা ও শুকিয়ে গেলে গাঢ় বাদামী হয়।

লবঙ্গ ইন্দোনেশিয়ার মালুকু দ্বীপের অধিবাসী। বর্তমানে বিশ্বের প্রায় সব দেশেই লবঙ্গ ব্যবহার করা হয়। মাদাগাস্কার এবং ইন্দোনেশিয়ায় লবঙ্গ ব্যাপকভাবে চাষ করা হয়। এটি ইন্দোনেশিয়ার স্থানীয় হলেও বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কায় প্রচুর পরিমাণে লবঙ্গ উৎপাদিত হয়।

লবঙ্গ তেলের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল এসিটাইল ইউজেনল, বিটা-ক্যারোফিলিন, ভ্যানিলিন, ক্রেট্যাগ্লাইকোলিক অ্যাসিড, ট্যানিন, গ্যালোট্যানিক অ্যাসিড, মিথাইল স্যালিসিলেট, ফ্ল্যাভোনয়েডস, ইউজেনিন, রমনেটিন, ইউজেন্টিন, ট্রাই-টারপেনয়েডস, ক্লিনোলিক অ্যাসিড, স্টিগস্টেরেসিস।

খনিজ পদার্থের মধ্যে রয়েছে ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, পটাসিয়াম, সোডিয়াম, জিঙ্ক – কমবেশি। আর ভিটামিনের মধ্যে রয়েছে B-6, B-12, C, A, E, D, K, থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন, নিয়াসিন, ফোলেট। এই সমস্ত যৌগগুলির অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে।

লবঙ্গে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে উৎপন্ন ফ্রি র‌্যাডিক্যাল ধ্বংস করতে পারে। ফলে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, ক্যান্সার প্রতিরোধেও এটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে। তাই প্রতিদিন খালি পেটে লবঙ্গ চিবিয়ে খেলে বেশ কিছু রোগের ঝুঁকি কমে যায়। বিশেষ করে যদি আপনি পাচনতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে চান এবং দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে চান, তাহলে লবঙ্গ হল উত্তর। সাধারণভাবে, লবঙ্গ অনেক অসুস্থতায় আশ্চর্যজনকভাবে কার্যকর। জেনে নিন লবঙ্গের স্বাস্থ্য উপকারিতা-

প্রতিদিন ঘুমানোর আগে ১টি লবঙ্গ ও ১ গ্লাস গরম পানি পান করলে বিভিন্ন রোগ থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া যায়। লবঙ্গ হজমে উন্নতি করতে সাহায্য করে। যেমন গ্যাস, বমি বমি ভাব এবং বদহজমের মতো অনেক সমস্যায় লবঙ্গ খুবই উপকারী। এছাড়াও, প্রতিদিন লবঙ্গ খাওয়া গলার সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। বুকে জমে থাকা কফ বের হয়। এটি হজম, কোলেস্টেটিক, হাঁপানি, জ্বর, বদহজম, কলেরা, মাথাব্যথা, হাঁচি ও কাশিতেও উপকারী।

লবঙ্গ কামোদ্দীপক এবং যৌন রোগে উপকারী। লবঙ্গ হল কামোদ্দীপক। এর সুগন্ধ শরীর ও মনের ক্লান্তি, ক্লান্তি দূর করে। যৌন শক্তি বাড়ায়।

লবঙ্গ লিভারে নতুন ও সুস্থ কোষ গঠনে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি লিভার থেকে বিভিন্ন ক্ষতিকারক পদার্থ দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। আসলে, লবঙ্গে থাইমল এবং ইউজেনল নামক সক্রিয় উপাদান রয়েছে যা লিভারকে শক্তিশালী করে।

লবঙ্গের আরেকটি উপাদান হল নাইজেরিসিন। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় দেখা গেছে এই উপাদানটি রক্ত ​​থেকে বিভিন্ন কোষে চিনি পৌঁছে দিতে, ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষের কার্যক্ষমতা বাড়াতে এবং ইনসুলিন নিঃসৃত হওয়ার পরিমাণ বাড়াতে ভালো কাজ করে। তাই মাঝারি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে লবঙ্গ ভালো কাজ করে।

কম-হাড়ের ভর এমন একটি অবস্থা যা বয়স্কদের অস্টিওপরোসিসের ঝুঁকি বাড়ায়। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে লবঙ্গ হাড়ের শক্তি এবং হাড়ের ঘনত্ব বাড়াতে সাহায্য করে।

দাঁতের ব্যথা কমায়। লবঙ্গ দাঁতের ব্যথা উপশম করে। মাড়ির রোগ সারায়। লবঙ্গে উপস্থিত অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্যগুলি এমনভাবে প্রতিক্রিয়া করে যা অবিলম্বে দাঁতের ব্যথা উপশম করে। প্রায় সব টুথপেস্টেই লবঙ্গ একটি সাধারণ উপাদান।

লবঙ্গ বমি বমি ভাব দূর করে। ট্রেন বা বাসে যাতায়াতের সময় মাথা ঘোরা এবং বমি বমি ভাব হলে মুখে লবঙ্গ রেখে রস চুষে নিলে বমি বমি ভাব ও মাথা ঘোরা কমে যাবে। গর্ভবতী মায়েরা সকালের অসুস্থতা থেকে মুক্তি পেতে লবঙ্গ চুষতে পারেন। লবঙ্গের সুগন্ধ বমি বমি ভাব দূর করে।

লবঙ্গ সর্দি এবং ফ্লু কমায়। লবঙ্গ বহু বছর ধরে সাধারণ ঠান্ডার প্রতিকার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। লবঙ্গ চিবিয়ে রস গিলে বা মুখে লবঙ্গ চুষে খেলে সর্দি, কফ, সর্দি, হাঁপানি, গলাব্যথা, রক্ত ​​পিত্ত এবং শ্বাসকষ্টের জন্য উপকারী।

ধোঁয়া, রোদ ও ঠাণ্ডা শ্লেষ্মা বাড়িয়ে বিভিন্ন ধরনের মাথাব্যথা বা মাথাব্যথার কারণ হতে পারে। মাথাব্যথা কমাতে লবঙ্গের উপকারিতা অপরিসীম।

চরম মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ কমায়। এক টুকরো লবঙ্গ মুখে নিয়ে চুষে নিন। লবঙ্গ চা পান করতে পারেন। মেজাজ হবে প্রফুল্ল।

রক্ত পরিশোধনে বিশেষ ভূমিকা রাখে। লবঙ্গ শরীর থেকে ক্ষতিকারক পদার্থ বের করে রক্ত ​​বিশুদ্ধ করতে ভূমিকা রাখে। রক্ত বিশুদ্ধ করে।

লবঙ্গ হজমশক্তি উন্নত করে। লবঙ্গ আমাদের পরিপাকতন্ত্রকে সক্রিয় করে এনজাইম নিঃসরণ করে যা হজমে সাহায্য করে এবং অ্যাসিড নিঃসরণ করে। এরোফ্ল্যাটুলেন্স, গ্যাস্ট্রিক সমস্যা, ডিসপেপসিয়া এবং বমি বমি ভাব কমাতে সাহায্য করে। এটি শরীরে রক্ত ​​চলাচলেরও উন্নতি ঘটায়।

বাতের ব্যথা কমায়। লবঙ্গে উপস্থিত অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য আর্থ্রাইটিসের প্রকোপ কমাতে সাহায্য করে। প্রসঙ্গত, জয়েন্টের ব্যথা, পেশির ব্যথা, হাঁটু, পিঠ বা হাড়ের ব্যথা এবং ফোলাভাব কমাতেও এই ঘরোয়া উপায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

লবঙ্গ ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। বিশেষ করে স্তন ক্যান্সার, ওভারিয়ান ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।

ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার প্রাকৃতিক প্রতিকার হিসেবে লবঙ্গ ব্যবহার করা হয়। লবঙ্গ বিশেষ করে ব্রণ, ফুসকুড়ি, ত্বকের ঔজ্জ্বল্য হ্রাস এমনকি মাথার ত্বকও দূর করে। ত্বকের বিভিন্ন দাগ দূর করতেও লবঙ্গ ব্যবহার করা যেতে পারে। যে কোনো দাগ দূর করুন। মুখে তেল ছিটকে ফোসকা পড়ে? মশার কামড়ে লাল হয়ে গেল? সমাধান লুকিয়ে আছে লবঙ্গ তেলে। লবঙ্গ তেল সহজেই যেকোনো দাগ দূর করে। এছাড়াও স্কিন টোন ভালো হয়। দাগ মুছে যায়।

ছত্রাকের ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি রোধে লবঙ্গ দুর্দান্ত। বিশেষ করে চুল পড়া কমাতে এবং চুলের সৌন্দর্য বাড়াতে লবঙ্গ তেলের সাথে যুক্ত। এক্ষেত্রে সমপরিমাণ অলিভ অয়েলের সঙ্গে আধা চামচ লবঙ্গ তেল মিশিয়ে চুলের গোড়ায় লাগিয়ে দশ মিনিট ম্যাসাজ করুন। এক মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে চুল ধুতে ভুলবেন না যেন! নিয়মিত এভাবে চুলের যত্ন নিলে উপকার পাওয়া যাবে। লবঙ্গের তেল এবং লেবুর রস একসঙ্গে মিশিয়ে লাগালে খুশকি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

About Shariful Islam

Check Also

মেয়েরা যৌন মিলন করলে কি কি উপকার হয় জেনে নিন!

ভালবাসা প্রকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল শারীরিক যোগাযোগ আবার, এটি শারীরিক চাহিদার প্রকাশও। কিন্তু শারীরিক …