সিনেমার চিত্রনাট্যে এখন অনেক রকমের বদল ঘটছে। সিনেমাতে সাহসী দৃশ্য থেকে শুরু করে কমেডি সবকিছুই খুব যত্নসহকারে দর্শকদের সামনে তুলে ধরা হয়। আবার যখন কোন সিনেমায় নগ্নতা, যৌনদৃশ্য বেশি দেখানো হয় সেটি নিয়ে চর্চা বেশি চলতেই থাকে।
কেউ কেউ বলেন, এটা শিল্পের প্রয়োজনে করা হয়, আবার কেউ বলেন সস্তায় প্রচার পাবার জন্য এই দৃশ্য তৈরি হয়। ২০২২ এ দাঁড়িয়েও এই যৌন দৃশ্য নিয়ে চর্চা কিন্তু এখনও যায়নি। চিত্রনাট্যে বদল ঘটুক না কেন মানুষের মনে যৌনদৃশ্য সম্পর্কে এক অন্যরকম চিন্তা ধারা রয়েছে।
তবে সত্তরের দশক থেকে বলিউডে এইসব সাহসী দৃশ্য, যৌন দৃশ্য দেখানো শুরু হয় ধীরে ধীরে। অনেক ছবিতে নারীদের শরীর খোলামেলাভাবে দেখানো হয়েছে। যাইহোক, সেই ছবিগুলি ভারতে মুক্তি পাওয়ার আগে, সাহসী দৃশ্যগুলি প্রায়শই চলচ্চিত্রগুলি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। আজ এই প্রতিবেদনে সত্তরের দশকের এমনই কিছু সিনেমার কথা বলব।
মেরা নাম জোকার – সেই সময়ে রাজ কাপুর পরিচালিত ‘মেরা নাম জোকার’ ছিল সবচেয়ে বড় বাজেটের ছবি। দীর্ঘ ছয় বছর ধরে তৈরি হয়েছে এই ছবি। কিন্তু বক্স অফিসে সফল হয়নি। ১৯৭০ সালের এই ছবিতে সিমি গারেওয়াল এবং পদ্মিনী কোলহাপুরীকে বেশ কিছু স্পষ্ট দৃশ্যে দেখা গেছে।
এ সময় সিমিকে পেছন থেকে একটি দৃশ্য দেখানো হয়, যেখানে সে সম্পূর্ণ নগ্ন। বলা হয়ে থাকে সে সময়ের সবচেয়ে সাহসী দৃশ্য। আবার পদ্মিনীও এই একই ছবিতে বেশ কিছু সাহসী দৃশ্যে অভিনয় করেছেন
দস্তক-১৯৭০ সালের এই ছবিতেও সাদা-কালো দৃশ্যে অভিনেত্রী রেহানা সুলতানের শরীরের উপরের অংশ সম্পূর্ণ অনাবৃত ছিল। শুধু তার স্তন দুটি হাত দিয়ে ঢাকা ছিল।
জরুরাত- আবার ১৯৭২ সালে ‘জরুরাত’ ছবিতে রীনা রায়কে পোশাক ছাড়াই পেছন থেকে দেখানো হয়েছিল। এটি ছিল রীনা রায়ের প্রথম ছবি।
সত্যম শিবম সুন্দরম- ১৯৭৮ সালে রাজ কাপুর পরিচালিত ‘সত্যম শিবম সুন্দরম’ ছবিতে জিনাত আমানের বেশ কয়েকটি সাহসী দৃশ্য ছিল। এই ছবিতে তিনি বেশিরভাগ সময় শুধু সাদা শাড়ি পরেছিলেন। আর সেই সাদা শাড়ির ভিতর দিয়ে ওর বুকটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।
গহরাই- ১৯৮০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবিতে পদ্মিনী কালাপুরীর আবার একটি নগ্ন দৃশ্য ছিল। তার পিঠ আলগা চুলে ঢাকা ছিল কিন্তু তার নিতম্ব অনাবৃত ছিল।
উৎসব- ১৯৮৪ সালে রেখা, আমজাদ খান, শশী কাপুর অভিনীত ছবি মুক্তি পায় উৎসব। এই ছবিতে বহু খোলামেলা দৃশ্য ছিল। তবে নীনা গুপ্তার সাহসী দৃশ্য নজর কাড়ে।
রাম তেরি গঙ্গা ময়লি- ১৯৮৫ সালে ‘‘রাম তেরি গঙ্গা ময়লি’ ছবিতে মন্দাকিনী দুটি দৃশ্য বিতর্ক সৃষ্টি হয়। একটি গানে তার ভেজা শরীরে সাদা শাড়ি পড়ে নাচের দৃশ্য নজর কেড়েছিল সকলের। সেটা ছিল একেবারেই লাস্যময়ী নাচ। আবার এই ছবিতেই মন্দাকিনী সন্তানকে স্তন্যপান করিয়েছিলেন। ভারতের ছবিতেই এই প্রথম কোন মহিলার স্তনবৃন্ত উন্মুক্ত অবস্থায় দেখানো হয়েছিল।
তবে ধীরে ধীরে এসব সাহসী দৃশ্য নিয়ে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। অনেক ছবিতে এখন সাহসী দৃশ্য, নগ্নতা, ক্লোজ-আপ দেখানো হয়েছে। এবং আজকাল ওয়েব সিরিজে যৌনতা খুব সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু তখন সেন্সর বোর্ডের চোখ এড়িয়ে এই দৃশ্য পর্দায় আনা এত সহজ ছিল না।