চার হাত ও চার পা নিয়ে জন্ম নেওয়া সেই নবজাতকের চিকিৎসা মেলেনি রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।আশায় বুক বেঁধে ১৭ দিন হাসপাতালে থাকার পরও শিশুটির অস্ত্রোপচারের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। শেষ পর্যন্ত গতকাল রবিবার (২০ জুন) নবজাতকের বাবা-মা হাসপাতাল ছেড়ে নিজ দায়িত্বে সন্তানকে নিয়ে তাঁদের বাড়ি দিনাজপুরের কাহারোলে চলে যান।
নবজাতকের বাবা দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার মুকুন্দপুর ইউনিয়নের মুকুন্দপুর গ্রামের দিনমজুর গোলাম রব্বানী। গতকাল ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় তিনি বলেন, ছেলের চিকিৎসার জন্য বাড়ির তিনটি ছাগল বিক্রি করেছি। এছাড়া কারো কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছি।
আমি আমার সন্তানকে নিয়ে রংপুর মেডিকেলে আসার সময় আমার শ্বশুরবাড়ি থেকে এবং নিজের জমানো ২৫ হাজার টাকা নিয়ে আসি। সব টাকা চিকিৎসায় খরচ হয়। কিন্তু ডাক্তাররা ছেলেটিকে ঠিকমতো দেখতে পাননি। চিকিৎসা ঠিকমতো হয়নি।
গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘হাসপাতালের চিকিৎসক দুই মাস পর যোগাযোগ করতে বলেছেন’ এবং বলেন, ‘দুই মাস পর কী হবে জানি না। অপারেশন যদি করতেই হয় তাহলে টাকা পাবো কোথায়! আমি এই অদ্ভুত ছেলেটির জন্য খুব চিন্তিত।
নবজাতকের বাবার অভিযোগ, “হাসপাতালে কোনো চিকিৎসা নেই। তাই আমি আমার ছেলেকে বাড়িতে নিয়ে এসেছি।’ কিন্তু তারা চলে যাওয়ার পর প্রবল ঘৃণা ও দীর্ঘশ্বাস নিয়ে ফিরে আসে।এদিকে নবজাতকের দিনমজুর বাবা গোলাম রব্বানী শিশুটির চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেছেন। সাহায্য
গত ৪ জুন দিনাজপুরের বীরগঞ্জ পৌরশহরের খানসমা রোডে অবস্থিত বীরগঞ্জ ক্লিনিকে চার হাত ও চার পা বিশিষ্ট এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন গোলাম রব্বানীর স্ত্রী রুনা লায়লা। স্বাভাবিকভাবেই সন্তান প্রসব করলেও অদ্ভুত নবজাতকটিকে ওইদিনই রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পঞ্চম লার শিশু সার্জরি ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়।
চিকিৎসাধীন থাকাকালে বেশকিছু পরীক্ষা দেওয়া হয়। কিন্তু ১৭ দিনেও কোনো অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেননি সেখানকার চিকিৎসকরা। তার কোনো উন্নতিও হয়নি।এ ব্যাপারে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি ওয়ার্ডের প্রধান ডা. বাবলু কুমার সাহা বলেন, ‘ওই নবজাতকের এই অঙ্গগুলোকে পরগাছা জাতীয় অঙ্গ বলে। অপারেশনের মাধ্যমে এগুলো অপসারণ করা সম্ভব। তবে এই ক্ষেত্রে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন।