Breaking News

এক পা ও দুই হাত বিহীন তামান্না বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ বিস্তারিত প্রতিবেদনে……।

যশোরের শিক্ষার্থী তামান্না আক্তার নূরা প্রতিবন্ধী কোঠায় পরীক্ষা না দিয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় ‘ক’ ইউনিটে উত্তীর্ণ হয়েছেন। বৃহস্পতিবার ৪ আগস্ট বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ ভর্তি সংক্রান্ত ওয়েবসাইটে পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়।
‘ক’ ইউনিটে গুচ্ছ পরীক্ষায় পাসের হার ৫৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ। প্রকাশিত ফলাফলে তামান্না ৪৮.২৫ নম্বর অর্জন করেছেন।

এর আগে গত ৩০ জুলাই যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ওয়াইবিআইপিআরবিআই) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমিক ভবনের কেন্দ্রীয় গ্যালারিতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন তামান্না। তিনি যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া আলীপুরের শিল্পী দম্পতি রওশন আলী ও খাদিজা পারভীনের ছেলে।

শিক্ষাজীবনে অদম্য এই তরুণী মাত্র এক ধাপে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সব পাবলিক পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে সারা দেশকে চমকে দিয়েছেন। তামান্নার সাফল্যের কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানার খোঁজখবর নেন। একই সঙ্গে দুই বোন তামান্নার স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে আসেন তারা। বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যাও তার চিকিৎসার সব ব্যবস্থা করেছিলেন।

এদিকে, প্রাথমিকভাবে মেধা তালিকায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর উচ্ছ্বসিত তামান্না। তিনি বলেন, প্রাথমিক ফলাফলে তিনি খুশি। ভালো নম্বরও পেয়েছে। আশা করি যে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাবো।তামান্না বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চাইলেও বাবার জন্য অন্য ভাই-বোনের খরচে পড়ানো কঠিন হবে।

তাই যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চাই। তিনি বলেন, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইয়াবিপ্রবি) মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ যে নম্বর এসেছে তা দিয়ে চয়েস দেবে।তামান্নার বাবা রওশন আলী জানান, তামান্নার স্বপ্ন গবেষণা সংক্রান্ত বিষয়ে পড়াশোনা করে বিসিএস নিয়ে সরকারি চাকরি করা।

স্বপ্ন পূরণে কয়েক মাস আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি। দুর্ভাগ্যবশত তিনি সেখানে একটি সুযোগ দাঁড়াননি. ইয়াবি প্রবিতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস্টার পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন। সেই রেজাল্টে সে পাস করেছে। আশা করি বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পাবে তার স্বপ্ন পূরণের।

তিনি আরও বলেন, যবিপ্রবির সুযোগ পেলে তামান্না ও আমার পরিবারের জন্য ভালো হবে। কারণ তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ল্যাব এবং বিভিন্ন প্র্যাকটিক্যালের জন্য বিভিন্ন ভবনে যেতে হতে পারে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে লিফট নেই। এটা ইয়াবি প্রবিতে।

তামান্নার পড়াশোনায় ভালো ভূমিকা রাখবে। তাছাড়া আমি নন-এমপিওভুক্ত দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক। টিউশনি করে সংসার চালাই। জেলার বাইরে পড়াশোনার খরচ বহন করা আমার পক্ষে সম্ভব হবে না।তাছাড়া তামান্না যেখানেই লেখাপড়া করুক না কেন তার পরিবার তার পাশে থাকবে। কারণ এর আন্দোলনের জন্য সকল কাজে একজন ব্যক্তির সহযোগিতা প্রয়োজন।

তাই বাড়ির কাছে নিজ শহরে ইয়াবিপ্রবিতে পড়তে চান তিনি। আমার চাকরি করা যায়, ও ভালোভাবে পড়ালেখা করতে পারে। তামান্নার জন্য সবার দোয়া চাই।যবিপ্রবির জনসংযোগ দপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুর রশিদ অর্ণব বলেন, তামান্নার প্রতিবন্ধী কোটায় পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু সেই সুযোগ সে নেয়নি। নিজের মেধার জোরে পড়াশোনা করতে চায়। তার এই অদম্য ছুটে চলা অবশ্যই প্রশংসিত।

উল্লেখ্য, তামান্না আক্তার নূরার জন্ম ২০০৩ সালের ১২ ডিসেম্বর। তামান্নার বাবা রওশন আলী ঝিকরগাছা উপজেলার দাউলিয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসার (ননএমপিও) শিক্ষক। মা খাদিজা পারভীন গৃহিণী। তিন ভাইবোনের মধ্যে তামান্না সবার বড়। ছোট বোন মুমতাহিনা রশ্মি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। ভাই মুহিবুল্লা তাজ প্রথম শ্রেণিতে।

ছয় বছর বয়সে তামান্নাকে পায়ে কাঠি দিয়ে লেখানোর চেষ্টা করে তার পরিবার। গেল বছরে এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়ার পরে গত ২৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করাসহ দুটি স্বপ্নের কথা জানিয়ে চিঠি লিখেছিলেন তামান্না।সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা ১৪ ফেব্রুয়ারি তামান্নাকে ফোনে অভিনন্দন জানান। একই সঙ্গে দুই বোন তামান্নাকে তার স্বপ্ন পূরণে যেকোনো ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

About Shariful Islam

Check Also

জানা গেল নোরা ফাতেহির বর্তমান সম্পদের পরিমাণ! চোখ কপালে নেটিজনদের

বলিউড অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী নোরা ফাতেহি। ‘দিলবর’, ‘কোমারিয়া’, ‘ও সাকি সাকি’, ‘গারমি’সহ অনেক জনপ্রিয় গানে …